বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্রগুলোর গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা প্রক্রিয়া হল সংস্কৃতির উপাদান দিয়ে অন্য রাষ্ট্র দখলে রাখা। নীতিটি অনেক কস্ট এফেক্টিভ এবং লংবিলিটি ক্যারি করে। পলিসিটা অনেক প্রাচীন। অর্থনৈতিকভাবে তুলনামূলক দুর্বল রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অন্য রাষ্ট্রের উপর এই প্রক্রিয়াকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে।
বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে রয়েছে ইন্ডিয়ার “র”,পাকিস্তানের আইএসআই, মধ্য এশিয়ায় ইরানের সিআইসি, সৌদি আরবের জিআইপি, লাতিন আমেরিকার মধ্যে আছে কিউবার ডিজিআই।
এছাড়াও ধন্নাঢ্য পরাশক্তি দেশগুলোর মধ্যে তুলনামূলক গরীব রাষ্ট্র চীনের এমএসএস।
এরা একেক জন একেক ইন্টারেস্টের জন্য কাজ করে থাকে। যেমন ইন্ডিয়া দক্ষিণ এশিয়াকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে গান-বাজনা, সিনেমা, খাবার-দাবার, পোষাক, চিকিৎসা, ভ্রমণ, শিক্ষা ইত্যাদি ব্যবহার করে। অন্যদিকে পাকিস্তান এরই কাউন্টার হিসেবে ধর্ম, জাতিস্বত্তাকে প্রমোট করে। ওদিকে সৌদি-আরব ১,৪০০ বছর ধরে একচেটিয়া মক্কা কেন্দ্রিক বাণিজ্য ও হজ্জের বিপুল আয় একাই ভোগ করে। তাই গরীব মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে মসজিদ-মাদ্রাসা, দান খয়রাত করে পক্ষে রাখে। ইরান আবার সৌদিকে একাই মুসলিম বিশ্বের হোক ভোগ করতে দিবে না বলে এর কাউন্টার পলিসি নিয়ে কাজ করে। চীন সারা পৃথিবীতে তাদের তৈরী করা পণ্য টিকানো নিয়ে কাজ করে। এত বৃহৎ অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের রাষ্ট্র যদি অন্য মুদ্রায় আন্তর্জাতিক লেনদেন শুরু করে দেয়, সেই ভয়ে আমেরিকার সিআইএ এর কাউন্টার পলিসি নিয়ে কাজ করে।
ইত্যাদি নানা পলিসির কর্মকান্ড ও উপ কার্যক্রমগুলোর রেশ প্রতিটি রাষ্ট্রের প্রতিটি এলাকা প্রতিটি মানুষের উপরেই পড়ে। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। যেমন: মঙ্গল শোভা যাত্রা হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি, আবার যারা বলে হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি তারা নাকি মৌলবাদী, বাংলা ক্যালেন্ডার থাকা সত্যেও অর্থবছর গণনা হয় ইংলিশ ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, পহেলা বৈশাখে পান্তা ইলিশ খাওয়ার রেওয়াজ থাকলেও ইফতার করা হয় ছোলা, পেঁয়াজু, আলুর চপ দিয়ে। বলা চলে ইত্যাদি ঘটনাগুলো গোয়েন্দা উপকার্যক্রমের রেশ মাত্র।
এত কিছুর পরেও দিন শেষে নিজেদের অস্থিত্ব বিশ্বের বুকে সুস্পষ্ট কিনা তা নিশ্চিত হওয়া ও সেই অনুযায়ী কাজ করাটাই গুরুত্বপূর্ণ।
শুভ নববর্ষ!