ইউক্রেন তার বর্তমান যুদ্ধ কৌশল পরিবর্তন করার কথা বলে রাশিয়ার ভূখণ্ড লক্ষ্য করে দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র স্টর্ম শ্যাডো ব্যবহারের কথা ভাবছে। অপেক্ষায় আছে আন্তর্জাতিক মহলের সবুজ সংকেতের। এই অবস্থায় তাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, এই স্টার্ম শ্যাডো আসলে কী?
স্টর্ম শ্যাডো হল একটি দূরপাল্লার এয়ার-লঞ্চ করা ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। এটি ১৯৯৪ সালে যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সের তৈরি। এটি মূলত, ব্রিটিশ অ্যারোস্পেস দ্বারা নির্মিত। র্স্টম শ্যাডো মিসাইল এমবিডিএ সিস্টেম দ্বারা তৈরি। ‘স্টর্ম শ্যাডো’ অস্ত্রটির ব্রিটিশ নাম, ফ্রান্সে এটিকে এসসিএএলপি-ইজি বলা হয়।
এটি প্রায় ৫০০ কিমি দূরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। আর এই ক্ষেপণাস্ত্রটি এরইমধ্যে ইউক্রেনীয় যুদ্ধবিমানে সংযুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার তৈরি এসইউ-২৪ বোমারু বিমান। যা অতীতের সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ হিসেবে ইউক্রেন রাশিয়ার কাছ থেকে পেয়েছিল।
তবে সমস্যা হলো, ইউক্রেন কীভাবে এই ধরনের দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র রপ্তানির অনুমতি পেল তা এখনও পরিষ্কার নয়। কারণ মিসাইল টেকনোলজি কন্ট্রোল রেজিম বা এমটিসিআর ৩০০ কিলোমিটারের বেশি পাল্লার এবং ৫০০ কেজি পেলোড ক্ষমতার একটি ক্ষেপণাস্ত্র রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে। এক্ষেত্রে স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্রের ওয়ারহেড ৫০০ কেজির কম হলেও, এটি সীমা অতিক্রম করার ক্ষেত্রে এমটিসিআর নিতিমালা লঙ্ঘন করে। যার ফলে ইউক্রেন এটি ব্যবহার করতে পারবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।
এমটিসিআর অবশ্য সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে একটি অনানুষ্ঠানিক রাজনৈতিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়। যার ফলে এর প্রবিধানগুলি সর্বদা বাধ্যতামূলক নয়। কাজেই এটি যদি ব্যবহার করে ইউক্রেন তাহলে তা এমটিসিআর এর থেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে মত নিয়েই করতে পারবে।
অবশ্য ইউক্রেন এই ক্ষেপণাস্ত্র চালালে রাশিয়া যে তাদের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কথা ভাববে না সেটিও জোর গলায় বলার সুযোগ নেই। কেননা, কদিন আগেই নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্র দেখিয়ে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রকে সর্তক করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কাজেই নতুন করে ইউক্রেন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র চালালে সেটি যে এই যুদ্ধকে ভয়ানক পরিণতির দিকে ঠেলে দেবে তা অনুমেয়ই।
সূত্র: বিবিসি